মরদেহ স্তূপ করে আগুনে পোড়ানোয় অভিযুক্ত সাবেক অতিঃ পুলিশ সুপার কাফী আটক
- আপডেট সময় : ১২:৫৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৯ বার পড়া হয়েছে
’একটি ভ্যানে মানুষের নিথর দেহ স্তূপ করে চাদর দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন মাথায় হেলমেট ও ভেস্ট পরা কিছু পুলিশ সদস্য। সেই স্তূপের ওপর আরও মরদেহ রেখে সেগুলোও রাস্তার পাশে থাকা পরিত্যক্ত ব্যানার দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন ওই পুলিশ সদস্যরা। এরপর মরদেহগুলো জ্বালিয়ে দেন তারা।’ – এটি কোনো সিনেমার দৃশ্য নয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি এমনই একটি লোমহর্ষক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
এবার গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ার ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আব্দুল্লাহিল কাফীকে এসব অভিযোগে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, গোপনসূত্রে আব্দুল্লাহিল কাফীর পালিয়ে যাওয়ার খবর পায় তারা। এরপর দিনভর নানা নাটকীয়তার পর সোমবার রাত ১০টার দিকে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করতে সমর্থ হয় তাদের একটি দল। গত ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়ায় ছাত্রজনতাকে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগে অভিযুক্ত আব্দুল্লাহিল কাফী।
এর আগে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহাম্মদ মুঈদ জানিয়েছিলেন, পুলিশের ভেস্ট ও হেলমেট পরিহিত যে ব্যক্তি বা যারা মরদেহ তুলছিলেন ভ্যানে এবং আশেপাশে যারা ছিলেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাদের পরিচয় সম্পর্কে লেখা হয়েছে। এরইমধ্যে তিনজনকে চিহ্নিত করা গেছে।
তিনি বলেন, আমরা তিনজনকে এরইমধ্যে আইডেন্টিফাই করেছি। অলরেডি একটা ইনকোয়ারি কমিটি করেছি। তারা অলরেডি ইনকোয়ারি করছে। একটা কমপ্লিট রিপোর্ট আসবে।
এ ঘটনাকে ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’ হিসেবে অভিহিত করে তিনি জানান, এ ঘটনায় ফৌজদারি মামলার পাশাপাশি সরকারি চাকরিজীবীদের যে রুলস রয়েছে, সেটার আওতায়ও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনই নামগুলো প্রকাশ করা যাবে না।
তিনি বলেন, এ তিনজনই ওই থানার এলাকায় দায়িত্বে ছিলেন। এই মুহূর্তে নামটা আমরা ডিসক্লোজ করছি না। আরো তদন্তের স্বার্থে। এগুলো সব আইডেন্টিফাইড, সব। ভিজিবল, আর ভিডিও আছে যেহেতু। একইসাথে সাংবাদিকদের দেওয়া তথ্যের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও পুলিশ কাজ করছে।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশের এসব সদস্যকে আইনের আওতায় আনার জন্য খোঁজা হচ্ছে। তাই পরিচয় প্রকাশ পেলে তাদের খুঁজে পাওয়া মুশকিল হবে। যত দ্রুত সম্ভব এটাকে আইডেন্টিফাই করে এগুলার ব্যাপারে আইনগত প্রক্রিয়া আমরা শেষ করবো।
এদিকে গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, এদের মধ্যে ডিবির কয়েকজন কর্মকর্তাও ছিলেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে ওই ভ্যানে থাকা মরদেহের সংখ্যা একেক ধরনের বলা হয়েছে। তবে, ঢাকার পুলিশ সুপার মুঈদ ছয়টি মরদেহের কথা জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ভ্যানে থাকা ব্যক্তিদের একজনের হাত দেখে এক নারী নিজের স্বামী হিসেবে দাবি করেছেন। তাকে ডাকা হয়েছে। এছাড়া থানায় একটি নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরিও হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের একটি পত্রিকায় চার জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।