ঢাকা ০৪:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
দুদকের মানি লন্ডারিংয়ের মামলা থেকে বিএনপির ছয় শীর্ষ নেতাসহ নয়জনকে অব্যাহতি মরহুম এম সাইফুর রহমান দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ছিলেন: শামসুজ্জামান দুদু দেশের অর্থনৈতিক সংস্কারের পথিকৃৎ ছিলেন এম সাইফুর রহমান: ইমদাদ চৌধুরী পটপরিবর্তনের পর থেকে বায়তুল মোকাররমের খতিবের বর্তমান অবস্থান গোপালগঞ্জে ! অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠনের খবর গুজব, শিগগির আঁধার কেটে যাবে :বাহাউদ্দিন নাছিম দিল্লির নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার মাজারে শামীম ওসমান ! স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বার ও ব্যাঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকতে হবে -সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নবগঠিত অনলাইন প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দকে সিলেট মহানগর বিএনপির অভিনন্দন সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের নতুন নেতৃত্বকে আরিফুল হক চৌধুরীর অভিনন্দন নবনির্বাচিত অনলাইন প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দকে খন্দকার মুক্তাদিরের অভিনন্দন

ফেঁসে যাচ্ছেন সাবেক আইজিপি; ১১৯ দলিলের সম্পত্তি, গুলশানের ৪ ফ্ল্যাট জব্দের নির্দেশ !

নিজস্ব প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ০৮:০২:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪ ৬৬ বার পড়া হয়েছে

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা আরও ১১৯টি দলিলের সব সম্পত্তি জব্দের আদেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগরের সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন। 

রবিবারের এই আদেশে বেনজীরের স্ত্রী ও মেয়ের নামে থাকা ঢাকার গুলশানের ৪টি ফ্ল্যাটও জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সাবেক এই পুলিশ প্রধানের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি জব্দের আদেশ দেয় একই আদালত।

বেনজীরের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি জব্দে সেদিনের আদেশে বলা হয়, মানি লন্ডারিং আইন ২০১২ এর ১৪ ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন, বিধিমালা-২০০৭ এর বিধি ১৮ অনুযায়ী স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা হলো।

সেই আদেশের সঙ্গে যুক্ত দুদকে দেওয়া বেনজীরের সম্পদের তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, বেনজীরের চেয়ে তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তি বেশি।

সাবেক এই আইজিপি এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে প্রায় ১১১ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে তার নিজের নামে ৯ একর, স্ত্রী জীশান মির্জার নামে রয়েছে ৭৬ একর।

জমির পাশাপাশি বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ব্যাংক হিসাব ও পুঁজিবাজারে লেনদেন করার জন্য বেনিফিশারি ওনার্স (বিও) হিসাব মিলিয়ে মোট ৩৩টি হিসাব (অ্যাকাউন্ট) থাকার তথ্যও রয়েছে সংযুক্ত তালিকায়।

গোপালগঞ্জের সন্তান বেনজীর দুই বছর আইজিপির দায়িত্ব পালনের পর ২০২২ সালে অবসরে যান। আইজিপির দায়িত্ব পালনের আগে তিনি র‌্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। তারও আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার ছিলেন।

সম্প্রতি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে বেনজীরের বিপুল পরিমাণ অর্থ-বিত্তের মালিক হওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। তারপর বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানে আদালতে আবেদনও হয়। এরপর দুদকও তৎপর হয়।

পরে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তালিকা জমা পড়ে আদালতে।

দুদকের আবেদনে গত ২৩ মে বেনজীরের স্থাবর- অস্থাবর সব সম্পত্তি জব্দের আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন।

আদালতে দুদকের আবেদনে বেনজীরের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ নামে এবং স্ত্রী-সন্তানদের নামে দেশে-বিদেশে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়, যা বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন।

বেনজীর, তার পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের নামে থাকা স্থাবর সম্পদের তালিকা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তাদের মোট স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১১১ একর ২৯ শতাংশ, যার দলিল মূল্য ২৩ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যানের করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৩ এপ্রিল হাইকোর্ট বেনজীরের ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুই মাসের মধ্যে দুদকের অনুসন্ধান কমিটিকে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়।

বেনজীরের স্ত্রী জীশান মির্জার নামে থাকা ৭৬ একর ১১ শতাংশ স্থাবর সম্পত্তির দলিল মূল্য ১৯ কোটি ৭৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।

এর মধ্যে তার নামে কক্সবাজারের উখিয়ায় রয়েছে ৫৭ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ২৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকা; গোপালগঞ্জে আছে ৬ একর ৬০ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ৬২ লাখ টাকা।

এছাড়া জীশান মির্জার নামে গোপালগঞ্জে সাউদার্ন বিজনেস ইনিশিয়েটিভ, সাভানা ফার্ম প্রোডাক্টস, সাভানা পার্ক রিসোর্ট অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাব, সাভানা অ্যাগ্রো লিমিটেড ও সাভানা ন্যাচারাল পার্ক প্রাইভেট লিমিটেডের মোট ৬৮ একর ৯৪ শতাংশ জমি রয়েছে, যার মোট দলিল মূল্য ১৮ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার টাকা।

বেনজীর আহমেদের মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীরের নামে গোপালগঞ্জে রয়েছে ১৩ একর ৯১ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এছাড়া তার মা জীশান মির্জার সঙ্গে কোটালীপাড়ায় রয়েছে ৭ একর ৪২ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ৩০ লাখ ১৭ হাজার টাকা। তাদের সঙ্গে যৌথভাবে বেনজীরের আরেক মেয়ে জারার সম্পত্তি আছে ২ একর ১৮ শতাংশ, যার দলিল মূল্য ৯০ লাখ টাকা।

কোটালীপাড়ায় বেনজীরের দুই মেয়ে জারা ও তাহসিনের নামে রয়েছে ১ একর ৮৯ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ৬৫ লাখ ৫ হাজার টাকা।

বেনজীরের তিন মেয়ের নামে টুঙ্গিপাড়ায় রয়েছে আলাদা ৪৬ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ১৫ লাখ টাকা। এছাড়া তিন মেয়ের নামে উখিয়ায় রয়েছে ১৫ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

অস্থাবর সম্পদ

বেনজীর আহমেদের নামে কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ করপোরেট শাখায়, প্রাইম ব্যাংক মহাখালী শাখায় দুটি হিসাব (অ্যাকাউন্ট) রয়েছে। সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয় শাখায় আরও তিনটি চলতি হিসাব রয়েছে তার। সোনালী ব্যাংক রমনা করপোরেট শাখায় ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আছে বেনজীরের নামে।

সাবেক আইজিপি চারটি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতেন। সব কার্ডই সিটি ব্যাংকের। এর মধ্যে দুটি এমেক্স কার্ড এবং বাকি দুটি ভিসা কার্ড।

পুঁজিবাজারেও বিনিয়োগ রয়েছে বেনজীরের। আইএফআইসি সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও ড্রাগন সিকিউরিটিজ লিমিটেড প্রতিষ্ঠান দুটিতে পৃথক দুটি বিও হিসাব আছে তার নামে।

বেনজীরের স্ত্রী জীশান মির্জার নামে কমিউনিটি ব্যাংক লিমিটেডে একটি, আইএফআইসি ব্যাংক উত্তরা শাখায় দুটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক উত্তরা শাখায় একটি, সাউথইস্ট ব্যাংক দনিয়া শাখায় একটি ও বংশাল শাখায় আরেকটি হিসাব রয়েছে। এবি ব্যাংকেও রয়েছে তার আরেকটি হিসাব।

পুঁজিবাজারে সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিস লিমিটেডে ও ইবিএল সিকিউরিটিস লিমিটেডে জীসান মির্জার নামে রয়েছে দুটি বিও হিসাব।

বেনজীর আহমেদের বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীরের প্রিমিয়ার ব্যাংক বনানী শাখায় ও কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ করপোরেট শাখায় রয়েছে দুটি ব্যাংক হিসাব।

তার আরেক মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে সিটি ব্যাংক বনানী শাখায় ও প্রিমিয়ার ব্যাংক উত্তরা শাখায় রয়েছে দুটি ব্যাংক হিসাব। পুঁজিবাজারে ইবিএল সিকিউরিটিস ও ডাইনেস্টে সিকিউরিটিসে তার নামে আছে দুটি বিও হিসাব।

এছাড়া বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ‘একটি শিশির বিন্দু’র নামে সিটি ব্যাংক প্রগতি স্মরণি শাখায়, ‘স্টিলথ ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডের’ নামে সিটি ব্যাংক গুলশান নারী শাখায়, ‘সাভানা ফার্ম প্রোডাক্টসের’ নামে কমিউনিটি ব্যাংক, ‘সাভানা এগ্রো লিমিটেডের’ নামে ইউনিয়ন ব্যাংক গুলশান শাখায়, ‘সাভানা পার্ক রিসোর্ট অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের’ নামে ইউনিয়ন ব্যাংক গুলশান শাখায় ও ‘বাংলা টি ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডের’ নামে আইবিবিএল ভিআইপি রোড শাখায় ব্যাংক হিসাব রয়েছে।  

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ফেঁসে যাচ্ছেন সাবেক আইজিপি; ১১৯ দলিলের সম্পত্তি, গুলশানের ৪ ফ্ল্যাট জব্দের নির্দেশ !

আপডেট সময় : ০৮:০২:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা আরও ১১৯টি দলিলের সব সম্পত্তি জব্দের আদেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগরের সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন। 

রবিবারের এই আদেশে বেনজীরের স্ত্রী ও মেয়ের নামে থাকা ঢাকার গুলশানের ৪টি ফ্ল্যাটও জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সাবেক এই পুলিশ প্রধানের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি জব্দের আদেশ দেয় একই আদালত।

বেনজীরের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি জব্দে সেদিনের আদেশে বলা হয়, মানি লন্ডারিং আইন ২০১২ এর ১৪ ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন, বিধিমালা-২০০৭ এর বিধি ১৮ অনুযায়ী স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা হলো।

সেই আদেশের সঙ্গে যুক্ত দুদকে দেওয়া বেনজীরের সম্পদের তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, বেনজীরের চেয়ে তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তি বেশি।

সাবেক এই আইজিপি এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে প্রায় ১১১ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে তার নিজের নামে ৯ একর, স্ত্রী জীশান মির্জার নামে রয়েছে ৭৬ একর।

জমির পাশাপাশি বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ব্যাংক হিসাব ও পুঁজিবাজারে লেনদেন করার জন্য বেনিফিশারি ওনার্স (বিও) হিসাব মিলিয়ে মোট ৩৩টি হিসাব (অ্যাকাউন্ট) থাকার তথ্যও রয়েছে সংযুক্ত তালিকায়।

গোপালগঞ্জের সন্তান বেনজীর দুই বছর আইজিপির দায়িত্ব পালনের পর ২০২২ সালে অবসরে যান। আইজিপির দায়িত্ব পালনের আগে তিনি র‌্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। তারও আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার ছিলেন।

সম্প্রতি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে বেনজীরের বিপুল পরিমাণ অর্থ-বিত্তের মালিক হওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। তারপর বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানে আদালতে আবেদনও হয়। এরপর দুদকও তৎপর হয়।

পরে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তালিকা জমা পড়ে আদালতে।

দুদকের আবেদনে গত ২৩ মে বেনজীরের স্থাবর- অস্থাবর সব সম্পত্তি জব্দের আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন।

আদালতে দুদকের আবেদনে বেনজীরের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ নামে এবং স্ত্রী-সন্তানদের নামে দেশে-বিদেশে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়, যা বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন।

বেনজীর, তার পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের নামে থাকা স্থাবর সম্পদের তালিকা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তাদের মোট স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১১১ একর ২৯ শতাংশ, যার দলিল মূল্য ২৩ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যানের করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৩ এপ্রিল হাইকোর্ট বেনজীরের ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুই মাসের মধ্যে দুদকের অনুসন্ধান কমিটিকে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়।

বেনজীরের স্ত্রী জীশান মির্জার নামে থাকা ৭৬ একর ১১ শতাংশ স্থাবর সম্পত্তির দলিল মূল্য ১৯ কোটি ৭৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।

এর মধ্যে তার নামে কক্সবাজারের উখিয়ায় রয়েছে ৫৭ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ২৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকা; গোপালগঞ্জে আছে ৬ একর ৬০ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ৬২ লাখ টাকা।

এছাড়া জীশান মির্জার নামে গোপালগঞ্জে সাউদার্ন বিজনেস ইনিশিয়েটিভ, সাভানা ফার্ম প্রোডাক্টস, সাভানা পার্ক রিসোর্ট অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাব, সাভানা অ্যাগ্রো লিমিটেড ও সাভানা ন্যাচারাল পার্ক প্রাইভেট লিমিটেডের মোট ৬৮ একর ৯৪ শতাংশ জমি রয়েছে, যার মোট দলিল মূল্য ১৮ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার টাকা।

বেনজীর আহমেদের মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীরের নামে গোপালগঞ্জে রয়েছে ১৩ একর ৯১ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এছাড়া তার মা জীশান মির্জার সঙ্গে কোটালীপাড়ায় রয়েছে ৭ একর ৪২ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ৩০ লাখ ১৭ হাজার টাকা। তাদের সঙ্গে যৌথভাবে বেনজীরের আরেক মেয়ে জারার সম্পত্তি আছে ২ একর ১৮ শতাংশ, যার দলিল মূল্য ৯০ লাখ টাকা।

কোটালীপাড়ায় বেনজীরের দুই মেয়ে জারা ও তাহসিনের নামে রয়েছে ১ একর ৮৯ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ৬৫ লাখ ৫ হাজার টাকা।

বেনজীরের তিন মেয়ের নামে টুঙ্গিপাড়ায় রয়েছে আলাদা ৪৬ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ১৫ লাখ টাকা। এছাড়া তিন মেয়ের নামে উখিয়ায় রয়েছে ১৫ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

অস্থাবর সম্পদ

বেনজীর আহমেদের নামে কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ করপোরেট শাখায়, প্রাইম ব্যাংক মহাখালী শাখায় দুটি হিসাব (অ্যাকাউন্ট) রয়েছে। সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয় শাখায় আরও তিনটি চলতি হিসাব রয়েছে তার। সোনালী ব্যাংক রমনা করপোরেট শাখায় ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আছে বেনজীরের নামে।

সাবেক আইজিপি চারটি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতেন। সব কার্ডই সিটি ব্যাংকের। এর মধ্যে দুটি এমেক্স কার্ড এবং বাকি দুটি ভিসা কার্ড।

পুঁজিবাজারেও বিনিয়োগ রয়েছে বেনজীরের। আইএফআইসি সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও ড্রাগন সিকিউরিটিজ লিমিটেড প্রতিষ্ঠান দুটিতে পৃথক দুটি বিও হিসাব আছে তার নামে।

বেনজীরের স্ত্রী জীশান মির্জার নামে কমিউনিটি ব্যাংক লিমিটেডে একটি, আইএফআইসি ব্যাংক উত্তরা শাখায় দুটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক উত্তরা শাখায় একটি, সাউথইস্ট ব্যাংক দনিয়া শাখায় একটি ও বংশাল শাখায় আরেকটি হিসাব রয়েছে। এবি ব্যাংকেও রয়েছে তার আরেকটি হিসাব।

পুঁজিবাজারে সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিস লিমিটেডে ও ইবিএল সিকিউরিটিস লিমিটেডে জীসান মির্জার নামে রয়েছে দুটি বিও হিসাব।

বেনজীর আহমেদের বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীরের প্রিমিয়ার ব্যাংক বনানী শাখায় ও কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ করপোরেট শাখায় রয়েছে দুটি ব্যাংক হিসাব।

তার আরেক মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে সিটি ব্যাংক বনানী শাখায় ও প্রিমিয়ার ব্যাংক উত্তরা শাখায় রয়েছে দুটি ব্যাংক হিসাব। পুঁজিবাজারে ইবিএল সিকিউরিটিস ও ডাইনেস্টে সিকিউরিটিসে তার নামে আছে দুটি বিও হিসাব।

এছাড়া বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ‘একটি শিশির বিন্দু’র নামে সিটি ব্যাংক প্রগতি স্মরণি শাখায়, ‘স্টিলথ ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডের’ নামে সিটি ব্যাংক গুলশান নারী শাখায়, ‘সাভানা ফার্ম প্রোডাক্টসের’ নামে কমিউনিটি ব্যাংক, ‘সাভানা এগ্রো লিমিটেডের’ নামে ইউনিয়ন ব্যাংক গুলশান শাখায়, ‘সাভানা পার্ক রিসোর্ট অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের’ নামে ইউনিয়ন ব্যাংক গুলশান শাখায় ও ‘বাংলা টি ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডের’ নামে আইবিবিএল ভিআইপি রোড শাখায় ব্যাংক হিসাব রয়েছে।