ঢাকা ০৫:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
দুদকের মানি লন্ডারিংয়ের মামলা থেকে বিএনপির ছয় শীর্ষ নেতাসহ নয়জনকে অব্যাহতি মরহুম এম সাইফুর রহমান দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ছিলেন: শামসুজ্জামান দুদু দেশের অর্থনৈতিক সংস্কারের পথিকৃৎ ছিলেন এম সাইফুর রহমান: ইমদাদ চৌধুরী পটপরিবর্তনের পর থেকে বায়তুল মোকাররমের খতিবের বর্তমান অবস্থান গোপালগঞ্জে ! অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠনের খবর গুজব, শিগগির আঁধার কেটে যাবে :বাহাউদ্দিন নাছিম দিল্লির নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার মাজারে শামীম ওসমান ! স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বার ও ব্যাঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকতে হবে -সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নবগঠিত অনলাইন প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দকে সিলেট মহানগর বিএনপির অভিনন্দন সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের নতুন নেতৃত্বকে আরিফুল হক চৌধুরীর অভিনন্দন নবনির্বাচিত অনলাইন প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দকে খন্দকার মুক্তাদিরের অভিনন্দন

সিলেটে আর্মড পুলিশের অভিযানে মানব পাচারকারী চক্রের ২ জন আটক

মোহাম্মদ শাহজাহান আহমদ
  • আপডেট সময় : ১০:৪৩:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪ ৩২২ বার পড়া হয়েছে

মধ্যপ্রাচ্যের সাধারণ প্রবাসী ও দেশের সহজ সরল মানুষদের টার্গেট করে একশ্রেনীর দালাল ও মানব পাচার চক্র দীর্ঘদিন থেকে ইউরোপ আমেরিকার স্বপ্ন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন এক পাচার চক্র মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার মানব পাচারচক্রের হোতা শাহীন আলম ও তার ভাই সাইদুর রহমানের খপ্পরে নিঃস্ব একই জেলার জুড়ী উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়ডহর গ্রামের এলাইচ মিয়ার ছেলে সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী ইসলাম উদ্দিনসহ কয়েকজন প্রবাসী।

ইসলাম উদ্দিনের ভাই মাওলানা সালাহ উদ্দিনের অভিযোগের ভিত্তিতে ৭ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন আজ ১৩ মার্চ সকাল ৭.৩০ মিনিটে কুলাউড়া থানার কানেহাত গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে মানব পাচার চক্রের মূল হোতা শাহীন আলম ও তার ভাই সাইদুর রহমানকে আটক করা হয়। শাহীন আলম সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এই চক্রকে নেতৃত্ব দেয় এবং তার ভাই দেশে থেকে ট্রাভেল্স ব্যবসার আড়ালে মানব পাচারে সহযোগিতা করে।

মাওলানা সালাহ উদ্দিন তার অভিযোগে উল্লেখ করেন; বিবাদী ১। মোঃ শাহীন আলম (৪০), ২। সাইদুর রহমান (৪৪), উভয় পিতা- মাসুক মিয়া @ লেচু মিয়া, সাং- কানেহাত, থানা- কুলাউড়া, জেলা-মৌলভীবাজার সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী ও দালাল চক্রের সদস্য। তার ভাই ভিকটিম ইসলাম উদ্দিন ও আরেক ভাই শাহীন উদ্দিন সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাধারণ শ্রমিকের কাজ করেন। ১নং বিবাদী শাহীন আলম সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করার সুবাদে তার ভাইদের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার পরে ইসলাম উদ্দিন সহ আরো ২০/২৫ জন প্রবাসী সাধারণ শ্রমিককে আমেরিকা প্রেরনের প্রলোভন দেখায়। তার প্রলোভনে ইসলাম উদ্দিনকে আমেরিকা নেওয়ার জন্য শাহীন আলম এর সাথে ১৮,০০,০০০/- টাকার মৌখিক চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসে শাহীন আলমকে নগদ ৫,০০,০০০ টাকা প্রদান করা হয়। টাকা পেয়ে শাহীন আলম জানায়, ইসলাম উদ্দিন যে মালিকের কাছে আছে তার কাছ থেকে আমেরিকা পাঠানো যাবে না তাই ইসলাম উদ্দিনকে গত ১২ এপ্রিল’২৩ দেশে পাঠিয়ে দেয়। দেশে আসার পর শাহীন আলমের ভাই সাইদুর রহমান এর কাছে গত ২০ এপ্রিল’২৩ জমি জমা বিক্রি করে নগদ ৮,০০,০০০ টাকা দেয়।

গত ১৩ জুন’২৪ ভিকটিম ইসলাম উদ্দিনকে সংযুক্ত আরব আমিরাত হয়ে আমেরিকা নেওয়া কথা বলে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিয়ে যায়। সংযুক্ত আরব আমিরাতে তার অজ্ঞাতনামা পাচার চক্রের সদস্যদের কাছে ইসলাম উদ্দিনসহ আরো কয়েকজনকে জিম্মি করে রাখে। কারো সাথে যোগাযোগ করতে দেয় না। ভিকটিমের ভাই সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী শাহীন উদ্দিন অনেক কষ্টে দালাল শাহীন আলমের সাথে যোগাযোগ করলে সে জানায় কিছু দিনের মধ্যে আমেরিকা পাঠাবে। ভিকটিমের সাথে কথা বলতে বা দেখা করার কোন সুযোগ দালাল শাহীন আলম দেয় নাই। দীর্ঘদিন থেকে আমেরিকা না নেওয়া এবং জিম্মি রাখায় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে শাহীন আলম এর পরিবারকে চাপ দিলে দেশে প্রেরনের জন্য আরো ৮০,০০০/- টাকা দাবী করে। ৮০,০০০/- টাকা পেয়ে দীর্ঘ সময় জিম্মিসালায় রাখার পর গত ১০ নভেম্বর’২৩ ইসলাম উদ্দিনকে বাংলাদেশে প্রেরন করে। ভিকটিম ইসলাম উদ্দিন দেশের আসার পর শাহীন আলমের সহযোগী তার ভাই সাইদুর রহমানসহ তার পরিবারের কাছে বার বার গেলে কোন টাকা ফেরত পাওয়াসহ কোন সুবিচার পায় নাই। কিছুদিন পূর্বে দালাল শাহীন আলম দেশে আসলে গত ৬ মার্চ’২৪ সকাল ১০.৩০ টায় এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে দালাল শাহীন আলম এর কাছে গেলে সে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ হত্যার হুমকি প্রদান করে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

আটককৃত মানব পাচার চক্রের হোতা শাহীন আলম ও তার সহযোগী সাইদুর রহমানকে কুলাউড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ভিকটিম ইসলাম উদ্দিন এর ভাই মাওলানা সালাহ উদ্দিন বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় এজাহার দায়ের করেন। মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সিলেটে আর্মড পুলিশের অভিযানে মানব পাচারকারী চক্রের ২ জন আটক

আপডেট সময় : ১০:৪৩:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

মধ্যপ্রাচ্যের সাধারণ প্রবাসী ও দেশের সহজ সরল মানুষদের টার্গেট করে একশ্রেনীর দালাল ও মানব পাচার চক্র দীর্ঘদিন থেকে ইউরোপ আমেরিকার স্বপ্ন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন এক পাচার চক্র মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার মানব পাচারচক্রের হোতা শাহীন আলম ও তার ভাই সাইদুর রহমানের খপ্পরে নিঃস্ব একই জেলার জুড়ী উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়ডহর গ্রামের এলাইচ মিয়ার ছেলে সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী ইসলাম উদ্দিনসহ কয়েকজন প্রবাসী।

ইসলাম উদ্দিনের ভাই মাওলানা সালাহ উদ্দিনের অভিযোগের ভিত্তিতে ৭ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন আজ ১৩ মার্চ সকাল ৭.৩০ মিনিটে কুলাউড়া থানার কানেহাত গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে মানব পাচার চক্রের মূল হোতা শাহীন আলম ও তার ভাই সাইদুর রহমানকে আটক করা হয়। শাহীন আলম সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এই চক্রকে নেতৃত্ব দেয় এবং তার ভাই দেশে থেকে ট্রাভেল্স ব্যবসার আড়ালে মানব পাচারে সহযোগিতা করে।

মাওলানা সালাহ উদ্দিন তার অভিযোগে উল্লেখ করেন; বিবাদী ১। মোঃ শাহীন আলম (৪০), ২। সাইদুর রহমান (৪৪), উভয় পিতা- মাসুক মিয়া @ লেচু মিয়া, সাং- কানেহাত, থানা- কুলাউড়া, জেলা-মৌলভীবাজার সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী ও দালাল চক্রের সদস্য। তার ভাই ভিকটিম ইসলাম উদ্দিন ও আরেক ভাই শাহীন উদ্দিন সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাধারণ শ্রমিকের কাজ করেন। ১নং বিবাদী শাহীন আলম সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করার সুবাদে তার ভাইদের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার পরে ইসলাম উদ্দিন সহ আরো ২০/২৫ জন প্রবাসী সাধারণ শ্রমিককে আমেরিকা প্রেরনের প্রলোভন দেখায়। তার প্রলোভনে ইসলাম উদ্দিনকে আমেরিকা নেওয়ার জন্য শাহীন আলম এর সাথে ১৮,০০,০০০/- টাকার মৌখিক চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসে শাহীন আলমকে নগদ ৫,০০,০০০ টাকা প্রদান করা হয়। টাকা পেয়ে শাহীন আলম জানায়, ইসলাম উদ্দিন যে মালিকের কাছে আছে তার কাছ থেকে আমেরিকা পাঠানো যাবে না তাই ইসলাম উদ্দিনকে গত ১২ এপ্রিল’২৩ দেশে পাঠিয়ে দেয়। দেশে আসার পর শাহীন আলমের ভাই সাইদুর রহমান এর কাছে গত ২০ এপ্রিল’২৩ জমি জমা বিক্রি করে নগদ ৮,০০,০০০ টাকা দেয়।

গত ১৩ জুন’২৪ ভিকটিম ইসলাম উদ্দিনকে সংযুক্ত আরব আমিরাত হয়ে আমেরিকা নেওয়া কথা বলে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিয়ে যায়। সংযুক্ত আরব আমিরাতে তার অজ্ঞাতনামা পাচার চক্রের সদস্যদের কাছে ইসলাম উদ্দিনসহ আরো কয়েকজনকে জিম্মি করে রাখে। কারো সাথে যোগাযোগ করতে দেয় না। ভিকটিমের ভাই সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী শাহীন উদ্দিন অনেক কষ্টে দালাল শাহীন আলমের সাথে যোগাযোগ করলে সে জানায় কিছু দিনের মধ্যে আমেরিকা পাঠাবে। ভিকটিমের সাথে কথা বলতে বা দেখা করার কোন সুযোগ দালাল শাহীন আলম দেয় নাই। দীর্ঘদিন থেকে আমেরিকা না নেওয়া এবং জিম্মি রাখায় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে শাহীন আলম এর পরিবারকে চাপ দিলে দেশে প্রেরনের জন্য আরো ৮০,০০০/- টাকা দাবী করে। ৮০,০০০/- টাকা পেয়ে দীর্ঘ সময় জিম্মিসালায় রাখার পর গত ১০ নভেম্বর’২৩ ইসলাম উদ্দিনকে বাংলাদেশে প্রেরন করে। ভিকটিম ইসলাম উদ্দিন দেশের আসার পর শাহীন আলমের সহযোগী তার ভাই সাইদুর রহমানসহ তার পরিবারের কাছে বার বার গেলে কোন টাকা ফেরত পাওয়াসহ কোন সুবিচার পায় নাই। কিছুদিন পূর্বে দালাল শাহীন আলম দেশে আসলে গত ৬ মার্চ’২৪ সকাল ১০.৩০ টায় এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে দালাল শাহীন আলম এর কাছে গেলে সে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ হত্যার হুমকি প্রদান করে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

আটককৃত মানব পাচার চক্রের হোতা শাহীন আলম ও তার সহযোগী সাইদুর রহমানকে কুলাউড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ভিকটিম ইসলাম উদ্দিন এর ভাই মাওলানা সালাহ উদ্দিন বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় এজাহার দায়ের করেন। মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন আছে।