ঢাকা ০৫:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
দুদকের মানি লন্ডারিংয়ের মামলা থেকে বিএনপির ছয় শীর্ষ নেতাসহ নয়জনকে অব্যাহতি মরহুম এম সাইফুর রহমান দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ছিলেন: শামসুজ্জামান দুদু দেশের অর্থনৈতিক সংস্কারের পথিকৃৎ ছিলেন এম সাইফুর রহমান: ইমদাদ চৌধুরী পটপরিবর্তনের পর থেকে বায়তুল মোকাররমের খতিবের বর্তমান অবস্থান গোপালগঞ্জে ! অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠনের খবর গুজব, শিগগির আঁধার কেটে যাবে :বাহাউদ্দিন নাছিম দিল্লির নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার মাজারে শামীম ওসমান ! স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বার ও ব্যাঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকতে হবে -সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নবগঠিত অনলাইন প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দকে সিলেট মহানগর বিএনপির অভিনন্দন সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের নতুন নেতৃত্বকে আরিফুল হক চৌধুরীর অভিনন্দন নবনির্বাচিত অনলাইন প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দকে খন্দকার মুক্তাদিরের অভিনন্দন

পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে আবারও ভয়াবহ বন্যার আশংকা করছে সিলেটবাসী

তারেক আহমদ খান
  • আপডেট সময় : ১০:৪১:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪ ৩৮ বার পড়া হয়েছে

ভারতের মেঘালয়-চেরাপুঞ্জি থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে সিলেটের নদ-নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাটের নিম্নাঞ্চল সোমবার সকাল থেকে প্লাবিত হচ্ছে। গতকাল বৃষ্টিতে সুরমা নদীর পানি উপচে পরায় আবারও আশপাশের এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।

গত কিছুদিন ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদী ছাড়া সবকটি নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এলেও গতকাল ১ জুলাই সোমবার সকালে কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি ফের বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এর ফলে পুনরায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন সূত্রে বলা হয় সীমান্তবর্তী ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বিগত ২৮ জুন থেকে ১ জুলাই ২০২৪, সকাল পর্যন্ত ৩ দিনে মোট ৬৪০ মিলিমিটার (মি.মি.) বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়াও আজ ১ জুলাই থেকে আগামী ৩ জুলাই, ২০২৪ পর্যন্ত তিনদিনে মোট ৯৬৯ মি.মি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার এবং ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গতকাল সোমবার সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শাহ সজীব হোসাইন গণমাধ্যমকে জানান, রবিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৭ ঘণ্টায় সিলেটে ১০৪ মি.মি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরের মত সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি সবাইকে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানান।

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ছালিক রুমাইয়া জানান, আমাদের ৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। এছাড়া সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়া আছে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্য।তিনি বলেন, আমাদের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ ও বন্যা মোকাবেলা করতে সচেতন আছেন। তিনি বলেন, ২৯ মে প্রথম দফা বন্যায় আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় মোটামুটি আমরা মোকাবেলা করছি। এবার তৃতীয় দফার জন্য আমাদের আগাম বলা হয়েছিল। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়গুলোতে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। অফিসার নিয়োগের পাশাপাশি প্রতিটি ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ইউনিয়ন ভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। বন্যা আক্রান্ত জনগণের জন্য ত্রাণ বিতরণ ও খাদ্য ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

এদিকে ভারতের চেরাপূঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আসামের ব্রম্মপুত্র নদীতে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি ৪৬ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গেছে। আর এতে পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশংকা করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দিপক রঞ্জন দাস বলেন, তিনদিন এভাবে পানি বাড়তে থাকলে এবারের বন্যা হবে ভয়াবহ। কেননা, এরই মধ্যে নিম্নাঞ্চলে পানি টইটুম্বুর।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে আবারও ভয়াবহ বন্যার আশংকা করছে সিলেটবাসী

আপডেট সময় : ১০:৪১:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪

ভারতের মেঘালয়-চেরাপুঞ্জি থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে সিলেটের নদ-নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাটের নিম্নাঞ্চল সোমবার সকাল থেকে প্লাবিত হচ্ছে। গতকাল বৃষ্টিতে সুরমা নদীর পানি উপচে পরায় আবারও আশপাশের এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।

গত কিছুদিন ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদী ছাড়া সবকটি নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এলেও গতকাল ১ জুলাই সোমবার সকালে কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি ফের বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এর ফলে পুনরায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন সূত্রে বলা হয় সীমান্তবর্তী ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বিগত ২৮ জুন থেকে ১ জুলাই ২০২৪, সকাল পর্যন্ত ৩ দিনে মোট ৬৪০ মিলিমিটার (মি.মি.) বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়াও আজ ১ জুলাই থেকে আগামী ৩ জুলাই, ২০২৪ পর্যন্ত তিনদিনে মোট ৯৬৯ মি.মি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার এবং ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গতকাল সোমবার সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শাহ সজীব হোসাইন গণমাধ্যমকে জানান, রবিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৭ ঘণ্টায় সিলেটে ১০৪ মি.মি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরের মত সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি সবাইকে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানান।

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ছালিক রুমাইয়া জানান, আমাদের ৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। এছাড়া সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়া আছে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্য।তিনি বলেন, আমাদের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ ও বন্যা মোকাবেলা করতে সচেতন আছেন। তিনি বলেন, ২৯ মে প্রথম দফা বন্যায় আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় মোটামুটি আমরা মোকাবেলা করছি। এবার তৃতীয় দফার জন্য আমাদের আগাম বলা হয়েছিল। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়গুলোতে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। অফিসার নিয়োগের পাশাপাশি প্রতিটি ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ইউনিয়ন ভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। বন্যা আক্রান্ত জনগণের জন্য ত্রাণ বিতরণ ও খাদ্য ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

এদিকে ভারতের চেরাপূঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আসামের ব্রম্মপুত্র নদীতে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি ৪৬ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গেছে। আর এতে পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশংকা করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দিপক রঞ্জন দাস বলেন, তিনদিন এভাবে পানি বাড়তে থাকলে এবারের বন্যা হবে ভয়াবহ। কেননা, এরই মধ্যে নিম্নাঞ্চলে পানি টইটুম্বুর।