ঢাকা ০৫:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
লুন্টিত অস্ত্র কুমিল্লায় বিক্রি করতে গিয়ে যুবক গ্রেপ্তার পোশাক শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে নাশকতার সৃষ্টির অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার কমলগঞ্জে শমশেরনগর হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ বিতরণ বৈষম্যমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়তে কাউকে পিছিয়ে রাখা হবে না-পার্বত্য উপদেষ্টা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সিলেটে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান না হলে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামবে ব্যবসায়ীরা এলজিইডিই হচ্ছে গ্রাম বাংলার রূপ পরিবর্তনের প্রধান কারিগর: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বাজার ব্যবস্থাপনায় শূন্যস্থান পূরণ হয়েছে মাত্র, চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি: বাণিজ্য উপদেষ্টা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সেনাবাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ সামাজিক উন্নয়নে স্বেচ্ছাসেবী তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে- সৈয়দ তৌফিকুল হাদী সিলেটের পাথর কোয়ারী সমুহ খোলে দেয়ার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

সুনামগঞ্জ থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিমেল উদ্ধার: গাড়িচালকই মূল পরিকল্পনাকারী !

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ১২:৪৫:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৪ ১৬৮ বার পড়া হয়েছে

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাসিবুর রহমান হিমেলকে অপহরণ করেছিল পেশাদার আন্তর্জাতিক অপহরণকারী চক্র। এ অপহরণের অন্যতম পরিকল্পনাকারী তাদের পরিবারের গাড়িচালক সামিদুল ইসলাম। বড় অঙ্কের টাকা মুক্তিপণ আদায় করাই ছিল চক্রটির উদ্দেশ্য।

হিমেলকে উদ্ধার এবং অপহরণকারী চক্রের হোতাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানিয়েছে র‍্যাব।

দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বুধবার র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‍্যাব-১, র‍্যাব-৯ ও র‍্যাব-১৪’র দল অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের হোতা ও পরিকল্পনাকারী মো. আব্দুল মালেক (৩৫), তার অন্যতম সহযোগী ও পরিকল্পনাকারী সামিদুল ইসলামকে (৩০) যথাক্রমে ঢাকা ও নেত্রকোনা থেকে গ্রেপ্তার করে।

তাদের তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃত হিমেলকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে উদ্ধার এবং অপহরণকারী চক্রের সদস্য রনিকে (৪১) গ্রেপ্তার করা হয়। ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রাসেল মিয়া ও বিল্লাল হোসেনকে।

খন্দকার আল মঈন বলেন, হিমেল রাজধানীর উত্তরায় থাকেন। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষে পড়েন তিনি। চার মাস আগে তার বাবা মারা গেলে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি বাবার ব্যাটারির ব্যবসায় নামেন। চার বছর ধরে তাঁদের পরিবারের গাড়িচালক ছিলেন সামিদুল। পরিবারটির সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠায় তাদের আর্থিক ও সম্পত্তির সব তথ্য তিনি জানেন। পরে মালেকের সঙ্গে পরামর্শ করে হিমেলকে অপহরণ করেন। দুই কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায়ে করেন নির্মম নির্যাতন। মুক্তিপণের টাকা না পেলে হাত-পা কেটে ফেলার ও হত্যার হুমকি দেন।

র‍্যাব বলেছে, মালেক শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারতের ত্রিপুরা ও মেঘালয়েও অপহরণের সঙ্গে জড়িত। তার নামে দেশেই রয়েছে ১৪টি মামলা। রনির বিরুদ্ধে মেঘালয়ে রয়েছে পরোয়ানা। মালেক বিদেশি নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে হিমেলের মাকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করেন এবং ছেলেকে নির্যাতনের ভিডিও পাঠান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১৬ ডিসেম্বর মালেকের নেতৃত্বে উত্তরায় অপহরণের পরিকল্পনা করা হয়। সে অনুযায়ী সামিদুল ব্যাটারি বিক্রির সম্ভাবনার কথা জানিয়ে হিমেলকে শেরপুরে যেতে আগ্রহী করেন। ২৬ ডিসেম্বর সকালে তাঁরা রওনা দিলে গাজীপুরের সালনায় গাড়িসহ আটকে জিম্মি করে নেওয়া হয় ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী ধোবাউড়ায়। সেখান থেকে রাসেল ও বিল্লাল গাড়িটি গাজীপুরের বাসন এলাকায় রেখে আসেন। ধোবাউড়ায় তিন দিন রেখে অপহরণকারীরা হিমেলকে তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে যান। এই চক্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল নির্যাতন ও হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করে হিমেলকে ছেড়ে দেওয়া।

হিমেল নিখোঁজ হলে তার মা তহুরা বিনতে হক উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে ৬ জানুয়ারি তা অপহরণ মামলা হিসেবে রুজু করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সুনামগঞ্জ থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিমেল উদ্ধার: গাড়িচালকই মূল পরিকল্পনাকারী !

আপডেট সময় : ১২:৪৫:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৪

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাসিবুর রহমান হিমেলকে অপহরণ করেছিল পেশাদার আন্তর্জাতিক অপহরণকারী চক্র। এ অপহরণের অন্যতম পরিকল্পনাকারী তাদের পরিবারের গাড়িচালক সামিদুল ইসলাম। বড় অঙ্কের টাকা মুক্তিপণ আদায় করাই ছিল চক্রটির উদ্দেশ্য।

হিমেলকে উদ্ধার এবং অপহরণকারী চক্রের হোতাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানিয়েছে র‍্যাব।

দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বুধবার র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‍্যাব-১, র‍্যাব-৯ ও র‍্যাব-১৪’র দল অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের হোতা ও পরিকল্পনাকারী মো. আব্দুল মালেক (৩৫), তার অন্যতম সহযোগী ও পরিকল্পনাকারী সামিদুল ইসলামকে (৩০) যথাক্রমে ঢাকা ও নেত্রকোনা থেকে গ্রেপ্তার করে।

তাদের তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃত হিমেলকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে উদ্ধার এবং অপহরণকারী চক্রের সদস্য রনিকে (৪১) গ্রেপ্তার করা হয়। ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রাসেল মিয়া ও বিল্লাল হোসেনকে।

খন্দকার আল মঈন বলেন, হিমেল রাজধানীর উত্তরায় থাকেন। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষে পড়েন তিনি। চার মাস আগে তার বাবা মারা গেলে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি বাবার ব্যাটারির ব্যবসায় নামেন। চার বছর ধরে তাঁদের পরিবারের গাড়িচালক ছিলেন সামিদুল। পরিবারটির সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠায় তাদের আর্থিক ও সম্পত্তির সব তথ্য তিনি জানেন। পরে মালেকের সঙ্গে পরামর্শ করে হিমেলকে অপহরণ করেন। দুই কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায়ে করেন নির্মম নির্যাতন। মুক্তিপণের টাকা না পেলে হাত-পা কেটে ফেলার ও হত্যার হুমকি দেন।

র‍্যাব বলেছে, মালেক শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারতের ত্রিপুরা ও মেঘালয়েও অপহরণের সঙ্গে জড়িত। তার নামে দেশেই রয়েছে ১৪টি মামলা। রনির বিরুদ্ধে মেঘালয়ে রয়েছে পরোয়ানা। মালেক বিদেশি নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে হিমেলের মাকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করেন এবং ছেলেকে নির্যাতনের ভিডিও পাঠান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১৬ ডিসেম্বর মালেকের নেতৃত্বে উত্তরায় অপহরণের পরিকল্পনা করা হয়। সে অনুযায়ী সামিদুল ব্যাটারি বিক্রির সম্ভাবনার কথা জানিয়ে হিমেলকে শেরপুরে যেতে আগ্রহী করেন। ২৬ ডিসেম্বর সকালে তাঁরা রওনা দিলে গাজীপুরের সালনায় গাড়িসহ আটকে জিম্মি করে নেওয়া হয় ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী ধোবাউড়ায়। সেখান থেকে রাসেল ও বিল্লাল গাড়িটি গাজীপুরের বাসন এলাকায় রেখে আসেন। ধোবাউড়ায় তিন দিন রেখে অপহরণকারীরা হিমেলকে তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে যান। এই চক্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল নির্যাতন ও হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করে হিমেলকে ছেড়ে দেওয়া।

হিমেল নিখোঁজ হলে তার মা তহুরা বিনতে হক উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে ৬ জানুয়ারি তা অপহরণ মামলা হিসেবে রুজু করেন।