সিলেটের সাদাপাথরে পাথর লুটের ঘটনা
দৈনিক সমকালে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবাদে সিলেট মহানগর বিএনপির সংবাদ সম্মেলন
- আপডেট সময় : ০৫:২০:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫ ৭৩ বার পড়া হয়েছে
সিলেটের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর লুটে জড়িত থাকার অভিযোগ উল্লেখ করে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে বুধবার দুদকের বরাত দিয়ে দৈনিক সমকালে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাদাপাথর লুট নিয়ে তদন্তে লুটপাটে ৪২ জন রাজনৈতিক নেতার নাম পেয়েছে দুদক। যার মধ্যে কয়েস লোদী এবং ইমদাদ চৌধুরীও রয়েছেন।
প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর তার প্রতিবাদেবুধবার বিকেলে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে ওই সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, দৈনিক সমকালের চতুর্থ পাতায় এবং অনলাইন ভার্সনে ‘দুদকের অনুসন্ধান: সিলেটে সাদাপাথর চুরির সঙ্গে জড়িত ৪২ জন’ শীর্ষক সংবাদে দুদকের সূত্র দিয়ে কোনোপ্রকার সুনির্দিষ্ট সূত্র, যথাযথ অনুসন্ধান এবং কোনোপ্রকার তথ্য- প্রমাণ ছাড়াই সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন এবং সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত মর্মে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে আমার এবং সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর নাম লুটেরাদের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। এতে করে আমরা রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্নই নয়; বরং এ ধরনের বস্তবতাবিবর্জিত কাল্পনিক সংবাদের কারণে আমরা আশ্চর্য হয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর বিএনপির দুই নেতা বলেন, ‘আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, কোনোভাবেই এই অপকর্মের সঙ্গে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। এবং যারা এই মিথ্যা তথ্যটি পরিবেশন করেছেন; তাদেরকে এটি প্রমাণ করতেই হবে অথবা এ ধরনের মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশবের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে কয়েস লোদী আরও বলেন, প্রকৃতপক্ষে বিগত ১৫ বছর থেকে এই এলাকায় তৎক্ষালীন দখলদার আওয়ামী লীগের যোগসাজশে ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে এখানে লুটপাট চলছে, যা এখনও চলমান। প্রকাশিত সংবাদে প্রকৃত তথ্য না দিয়ে কোনোপ্রকার তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই মহানগর বিএনপিকে জড়ানোর এমন ঘটনা বিগত দেড় দশকের অপ-সাংবাদিকতা ও অপসংস্কৃতিকেই মনে করিয়ে দেয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এমন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রত্যাখ্যান করে সংবাদের স্বপক্ষে যথাযথ তথ্য প্রমাণ দেশবাসীর সামনে উপস্থাপন করার আহ্বান জানাচ্ছি। এ ধরনের ভিত্তিহীন, কাল্পনিক এবং গুজব ছড়ানোর জন্য আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছি।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট রেজিমের পতনের পর দেশ যখন নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে; ঠিক তখনই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে একটি পক্ষ অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সারাদেশে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে। এই ধারাবাহিকতায় গত কিছুদিন থেকে সিলেট বিএনপির নেতাকর্মীদের জড়িয়ে গুজব ও অপপ্রচার করা হচ্ছে। একটি পক্ষ ভোটের মাঠে সুবিধা করতে না পেরে এখন বিএনপিকে ঘায়েল করার চক্রান্ত করছে।
কয়েস লোদী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি এবং ধানের শীষের পক্ষে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে যখন জনজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, ঠিক তখনই শীষের সুনিশ্চিত বিজয়কে বাধাগ্রস্ত করতে এবং বিএনপিকে বিতর্কিত করতে তারা এই ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি যে, দুদকের কর্মকর্তারা সাদাপাথর সরেজমিন পরিদর্শনকালে এ ঘটনায় প্রশাসনের গাফিলতির বিষয়টি বলেছেন এবং সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টাও প্রশাসনের দায় আছে মর্মের গণমাধ্যমে বলেছেন। আমরা একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এই পাথর চুরির সাথে জড়িত সবাইকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রসমূহ দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকৃষ্ট করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাই এখন পর্যন্ত যে-সব পর্যটন কেন্দ্র অক্ষত রয়েছে; তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। অন্যথায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্ট হওয়ার ফলে পর্যটকরা সিলেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন।















