ঢাকা ০৫:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
যে কথা যায় না বলা শুধু বুঝা যায় লুন্টিত অস্ত্র কুমিল্লায় বিক্রি করতে গিয়ে যুবক গ্রেপ্তার পোশাক শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে নাশকতার সৃষ্টির অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার কমলগঞ্জে শমশেরনগর হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ বিতরণ বৈষম্যমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়তে কাউকে পিছিয়ে রাখা হবে না-পার্বত্য উপদেষ্টা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সিলেটে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান না হলে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামবে ব্যবসায়ীরা এলজিইডিই হচ্ছে গ্রাম বাংলার রূপ পরিবর্তনের প্রধান কারিগর: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বাজার ব্যবস্থাপনায় শূন্যস্থান পূরণ হয়েছে মাত্র, চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি: বাণিজ্য উপদেষ্টা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সেনাবাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ সামাজিক উন্নয়নে স্বেচ্ছাসেবী তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে- সৈয়দ তৌফিকুল হাদী

‘স্যার আমার বোন বের হয়ে খুশি করবে’- এসআই সাথে মাদক কারবারির কথোপকথন ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিবেদন:
  • আপডেট সময় : ০৫:০২:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৪ ১২৬ বার পড়া হয়েছে

‘দুই লাখ টাকা দাও, ৫০০ পিস দিয়ে মামলা দেব।’ ‘স্যার ১০০ পিস দেন। দুই লাখ টাকাও নেবেন, আবার ৫০০ পিস দেবেন! স্যার আমার বোন লাগলে বের হয়ে এসে আপনাকে খুশি (টাকা দিয়ে) করবে। জানেন না হেয় কী রকম, আপনি চাইলে কি আপনারে দেবে না?’ ‘তোমার ১ হাজার, ওই মহিলাকে ৩০০ পিস। সঙ্গে ১০০ গ্রাম দিয়ে মামলা দেব। ওসিই প্যারা দিচ্ছে আমারে। হেয় কয় তুইয়ো অর্ধেক খা, আমি তো খামুই। এহা খামু ক্যা, টিম সবাই আছে না! এত সহজ…, ভাগ করতে করতে আমি পাব পাঁচ ভাগের এক ভাগ।’

উল্লিখিত কথোপকথনটি রাজধানীর পল্লবী থানার এসআই মো. আনোয়ারুল ইসলাম এবং চিহ্নিত মাদককারবারি ফাতেমা বেগম ওরফে ফতের দুই বোনের মধ্যকার।

তাদের কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার এসআই আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে পল্লবী থানার একটি দল অভিযান চালিয়ে স্থানীয় চিহ্নিত মাদককারবারি ফাতেমা বেগম ওরফে ফতে এবং তার সেলসম্যান হিসেবে পরিচিত রেজিয়া বেগমকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের থানাহাজতে আটক করে খবর দেওয়া হয় ফাতেমার দুই বোন হোসনেয়ারা ও পাতিয়াকে। এর পর তাদের কাছে ৪ হাজার পিস ইয়াবা ৫০০ পিস বানাতে দাবি করা হয় ৩ লাখ টাকা। পরে তারা ২ লাখ টাকায় রাজি হন। এরপর মাদককারবারি ফাতেমার বোনের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে ৫০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে মামলা দেওয়া হয়, যার মামলা নং-২০, তারিখ ১৯-১-২৪।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুযায়ী, কারও কাছে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত ইয়াবা পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। অন্যদিকে ইয়াবার পরিমাণ ৪০০ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। ৪ হাজার পিস ইয়াবার ওজন সাধারণত ৪০০ গ্রাম হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে এসআই আনোয়ারুল ইসলাম ২ লাখ টাকা আর্থিক সুবিধা নিয়ে এক চিহ্নিত মাদককারবারিকে বাঁচাতে পরিমাণ কম দেখিয়েছেন।

এ বিষয়ে মাদককারবারি ফাতেমার বোন পাতিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার আমার বোন রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। এ সময় এসআই আনোয়ার তাকে এই দিকে আয় বলে ডেকে নেয়। পরে আমার বোন যায়, আমার বোনের সঙ্গে এসআইয়ের আগে থেকেই জানাশোনা ছিল। পরে তাকে একটি বাসার রুমে ডেকে নিয়ে রুমে তল্লাশি করে ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এরপর বলা হয়, এই ইয়াবা তার। তখন আমার বোন অস্বীকার করলেও তাকে জোর করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তারা আমাদের থানায় ডেকে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। পরে আমার বোন হোসনেয়ারা ২ লাখ টাকা দেয়।’

আপনার বোনের সঙ্গে এসআইয়ের পরিচয় কীভাবে জানতে চাইলে পাতিয়া বলেন, আসলে আমার বোন গাঁজা বেচত। যে কারণে এসআই আনোয়ার মাঝেমধ্যেই এসে টাকা নিত।

অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে এসআই আনোয়ারুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের ডিসি জসিম উদ্দিন বলেন, এসআই আনোয়ার এর বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফটো সূত্র: যমুনা টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

‘স্যার আমার বোন বের হয়ে খুশি করবে’- এসআই সাথে মাদক কারবারির কথোপকথন ভাইরাল

আপডেট সময় : ০৫:০২:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৪

‘দুই লাখ টাকা দাও, ৫০০ পিস দিয়ে মামলা দেব।’ ‘স্যার ১০০ পিস দেন। দুই লাখ টাকাও নেবেন, আবার ৫০০ পিস দেবেন! স্যার আমার বোন লাগলে বের হয়ে এসে আপনাকে খুশি (টাকা দিয়ে) করবে। জানেন না হেয় কী রকম, আপনি চাইলে কি আপনারে দেবে না?’ ‘তোমার ১ হাজার, ওই মহিলাকে ৩০০ পিস। সঙ্গে ১০০ গ্রাম দিয়ে মামলা দেব। ওসিই প্যারা দিচ্ছে আমারে। হেয় কয় তুইয়ো অর্ধেক খা, আমি তো খামুই। এহা খামু ক্যা, টিম সবাই আছে না! এত সহজ…, ভাগ করতে করতে আমি পাব পাঁচ ভাগের এক ভাগ।’

উল্লিখিত কথোপকথনটি রাজধানীর পল্লবী থানার এসআই মো. আনোয়ারুল ইসলাম এবং চিহ্নিত মাদককারবারি ফাতেমা বেগম ওরফে ফতের দুই বোনের মধ্যকার।

তাদের কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার এসআই আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে পল্লবী থানার একটি দল অভিযান চালিয়ে স্থানীয় চিহ্নিত মাদককারবারি ফাতেমা বেগম ওরফে ফতে এবং তার সেলসম্যান হিসেবে পরিচিত রেজিয়া বেগমকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের থানাহাজতে আটক করে খবর দেওয়া হয় ফাতেমার দুই বোন হোসনেয়ারা ও পাতিয়াকে। এর পর তাদের কাছে ৪ হাজার পিস ইয়াবা ৫০০ পিস বানাতে দাবি করা হয় ৩ লাখ টাকা। পরে তারা ২ লাখ টাকায় রাজি হন। এরপর মাদককারবারি ফাতেমার বোনের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে ৫০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে মামলা দেওয়া হয়, যার মামলা নং-২০, তারিখ ১৯-১-২৪।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুযায়ী, কারও কাছে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত ইয়াবা পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। অন্যদিকে ইয়াবার পরিমাণ ৪০০ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। ৪ হাজার পিস ইয়াবার ওজন সাধারণত ৪০০ গ্রাম হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে এসআই আনোয়ারুল ইসলাম ২ লাখ টাকা আর্থিক সুবিধা নিয়ে এক চিহ্নিত মাদককারবারিকে বাঁচাতে পরিমাণ কম দেখিয়েছেন।

এ বিষয়ে মাদককারবারি ফাতেমার বোন পাতিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার আমার বোন রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। এ সময় এসআই আনোয়ার তাকে এই দিকে আয় বলে ডেকে নেয়। পরে আমার বোন যায়, আমার বোনের সঙ্গে এসআইয়ের আগে থেকেই জানাশোনা ছিল। পরে তাকে একটি বাসার রুমে ডেকে নিয়ে রুমে তল্লাশি করে ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এরপর বলা হয়, এই ইয়াবা তার। তখন আমার বোন অস্বীকার করলেও তাকে জোর করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তারা আমাদের থানায় ডেকে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। পরে আমার বোন হোসনেয়ারা ২ লাখ টাকা দেয়।’

আপনার বোনের সঙ্গে এসআইয়ের পরিচয় কীভাবে জানতে চাইলে পাতিয়া বলেন, আসলে আমার বোন গাঁজা বেচত। যে কারণে এসআই আনোয়ার মাঝেমধ্যেই এসে টাকা নিত।

অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে এসআই আনোয়ারুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের ডিসি জসিম উদ্দিন বলেন, এসআই আনোয়ার এর বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফটো সূত্র: যমুনা টিভি