ঢাকা ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের অভিযানে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ ০৬ (ছয়) ডাকাত গ্রেফতারঃ আপনাদের ক্ষতির পরিমাণ অপূরনীয় : ইমদাদ চৌধুরী ওসমানীনগরে দলিল লেখক আখতার আহমদকে নিয়ে তোলপাড়! গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় বিসিবি কর্মকর্তা ইকরাম চৌধুরীর মৃত্যুতে ইমদাদ চৌধুরীর শোক প্রকাশ এবার সিলেটে ট্রাক চাপায় মারা গেলেন এক যুবক ! সিলেট মহানগর যুবদল নেতা রুবেলের পিতার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল তিনি ছিলেন একজন নিবেদিত প্রাণ ও ত্যাগী রাজনীতিবিদ- খন্দকার মুক্তাদির সিলেটে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সুরক্ষাসামগ্রী নিয়ে গবেষণা বিষয়ে কর্মশালা তিন শূন্যের পৃথিবী গড়তে দূষণ কমানোর বিকল্প নেই -নূর আজিজুর রহমান

‘স্যার আমার বোন বের হয়ে খুশি করবে’- এসআই সাথে মাদক কারবারির কথোপকথন ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিবেদন:
  • আপডেট সময় : ০৫:০২:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৪ ১৭৭ বার পড়া হয়েছে

‘দুই লাখ টাকা দাও, ৫০০ পিস দিয়ে মামলা দেব।’ ‘স্যার ১০০ পিস দেন। দুই লাখ টাকাও নেবেন, আবার ৫০০ পিস দেবেন! স্যার আমার বোন লাগলে বের হয়ে এসে আপনাকে খুশি (টাকা দিয়ে) করবে। জানেন না হেয় কী রকম, আপনি চাইলে কি আপনারে দেবে না?’ ‘তোমার ১ হাজার, ওই মহিলাকে ৩০০ পিস। সঙ্গে ১০০ গ্রাম দিয়ে মামলা দেব। ওসিই প্যারা দিচ্ছে আমারে। হেয় কয় তুইয়ো অর্ধেক খা, আমি তো খামুই। এহা খামু ক্যা, টিম সবাই আছে না! এত সহজ…, ভাগ করতে করতে আমি পাব পাঁচ ভাগের এক ভাগ।’

উল্লিখিত কথোপকথনটি রাজধানীর পল্লবী থানার এসআই মো. আনোয়ারুল ইসলাম এবং চিহ্নিত মাদককারবারি ফাতেমা বেগম ওরফে ফতের দুই বোনের মধ্যকার।

তাদের কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার এসআই আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে পল্লবী থানার একটি দল অভিযান চালিয়ে স্থানীয় চিহ্নিত মাদককারবারি ফাতেমা বেগম ওরফে ফতে এবং তার সেলসম্যান হিসেবে পরিচিত রেজিয়া বেগমকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের থানাহাজতে আটক করে খবর দেওয়া হয় ফাতেমার দুই বোন হোসনেয়ারা ও পাতিয়াকে। এর পর তাদের কাছে ৪ হাজার পিস ইয়াবা ৫০০ পিস বানাতে দাবি করা হয় ৩ লাখ টাকা। পরে তারা ২ লাখ টাকায় রাজি হন। এরপর মাদককারবারি ফাতেমার বোনের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে ৫০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে মামলা দেওয়া হয়, যার মামলা নং-২০, তারিখ ১৯-১-২৪।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুযায়ী, কারও কাছে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত ইয়াবা পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। অন্যদিকে ইয়াবার পরিমাণ ৪০০ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। ৪ হাজার পিস ইয়াবার ওজন সাধারণত ৪০০ গ্রাম হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে এসআই আনোয়ারুল ইসলাম ২ লাখ টাকা আর্থিক সুবিধা নিয়ে এক চিহ্নিত মাদককারবারিকে বাঁচাতে পরিমাণ কম দেখিয়েছেন।

এ বিষয়ে মাদককারবারি ফাতেমার বোন পাতিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার আমার বোন রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। এ সময় এসআই আনোয়ার তাকে এই দিকে আয় বলে ডেকে নেয়। পরে আমার বোন যায়, আমার বোনের সঙ্গে এসআইয়ের আগে থেকেই জানাশোনা ছিল। পরে তাকে একটি বাসার রুমে ডেকে নিয়ে রুমে তল্লাশি করে ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এরপর বলা হয়, এই ইয়াবা তার। তখন আমার বোন অস্বীকার করলেও তাকে জোর করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তারা আমাদের থানায় ডেকে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। পরে আমার বোন হোসনেয়ারা ২ লাখ টাকা দেয়।’

আপনার বোনের সঙ্গে এসআইয়ের পরিচয় কীভাবে জানতে চাইলে পাতিয়া বলেন, আসলে আমার বোন গাঁজা বেচত। যে কারণে এসআই আনোয়ার মাঝেমধ্যেই এসে টাকা নিত।

অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে এসআই আনোয়ারুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের ডিসি জসিম উদ্দিন বলেন, এসআই আনোয়ার এর বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফটো সূত্র: যমুনা টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

‘স্যার আমার বোন বের হয়ে খুশি করবে’- এসআই সাথে মাদক কারবারির কথোপকথন ভাইরাল

আপডেট সময় : ০৫:০২:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৪

‘দুই লাখ টাকা দাও, ৫০০ পিস দিয়ে মামলা দেব।’ ‘স্যার ১০০ পিস দেন। দুই লাখ টাকাও নেবেন, আবার ৫০০ পিস দেবেন! স্যার আমার বোন লাগলে বের হয়ে এসে আপনাকে খুশি (টাকা দিয়ে) করবে। জানেন না হেয় কী রকম, আপনি চাইলে কি আপনারে দেবে না?’ ‘তোমার ১ হাজার, ওই মহিলাকে ৩০০ পিস। সঙ্গে ১০০ গ্রাম দিয়ে মামলা দেব। ওসিই প্যারা দিচ্ছে আমারে। হেয় কয় তুইয়ো অর্ধেক খা, আমি তো খামুই। এহা খামু ক্যা, টিম সবাই আছে না! এত সহজ…, ভাগ করতে করতে আমি পাব পাঁচ ভাগের এক ভাগ।’

উল্লিখিত কথোপকথনটি রাজধানীর পল্লবী থানার এসআই মো. আনোয়ারুল ইসলাম এবং চিহ্নিত মাদককারবারি ফাতেমা বেগম ওরফে ফতের দুই বোনের মধ্যকার।

তাদের কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার এসআই আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে পল্লবী থানার একটি দল অভিযান চালিয়ে স্থানীয় চিহ্নিত মাদককারবারি ফাতেমা বেগম ওরফে ফতে এবং তার সেলসম্যান হিসেবে পরিচিত রেজিয়া বেগমকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের থানাহাজতে আটক করে খবর দেওয়া হয় ফাতেমার দুই বোন হোসনেয়ারা ও পাতিয়াকে। এর পর তাদের কাছে ৪ হাজার পিস ইয়াবা ৫০০ পিস বানাতে দাবি করা হয় ৩ লাখ টাকা। পরে তারা ২ লাখ টাকায় রাজি হন। এরপর মাদককারবারি ফাতেমার বোনের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে ৫০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে মামলা দেওয়া হয়, যার মামলা নং-২০, তারিখ ১৯-১-২৪।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুযায়ী, কারও কাছে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত ইয়াবা পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। অন্যদিকে ইয়াবার পরিমাণ ৪০০ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। ৪ হাজার পিস ইয়াবার ওজন সাধারণত ৪০০ গ্রাম হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে এসআই আনোয়ারুল ইসলাম ২ লাখ টাকা আর্থিক সুবিধা নিয়ে এক চিহ্নিত মাদককারবারিকে বাঁচাতে পরিমাণ কম দেখিয়েছেন।

এ বিষয়ে মাদককারবারি ফাতেমার বোন পাতিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার আমার বোন রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। এ সময় এসআই আনোয়ার তাকে এই দিকে আয় বলে ডেকে নেয়। পরে আমার বোন যায়, আমার বোনের সঙ্গে এসআইয়ের আগে থেকেই জানাশোনা ছিল। পরে তাকে একটি বাসার রুমে ডেকে নিয়ে রুমে তল্লাশি করে ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এরপর বলা হয়, এই ইয়াবা তার। তখন আমার বোন অস্বীকার করলেও তাকে জোর করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তারা আমাদের থানায় ডেকে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। পরে আমার বোন হোসনেয়ারা ২ লাখ টাকা দেয়।’

আপনার বোনের সঙ্গে এসআইয়ের পরিচয় কীভাবে জানতে চাইলে পাতিয়া বলেন, আসলে আমার বোন গাঁজা বেচত। যে কারণে এসআই আনোয়ার মাঝেমধ্যেই এসে টাকা নিত।

অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে এসআই আনোয়ারুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের ডিসি জসিম উদ্দিন বলেন, এসআই আনোয়ার এর বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফটো সূত্র: যমুনা টিভি